দুই হাজার টাকা করকে স্বাগত জানালেন সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদেরা


কিছু সেবা পেতে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে টিআইএনধারীদের রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা করের বিধান রাখা হয়েছে। এটি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হলেও সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) নেতারা প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এই টাকা তো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যাবে। এ জন্য আমাদের গর্ব করা উচিত। বেতনের সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টা করজাল বাড়ানোর জন্য একটা নিজস্ব উদ্ভাবনী উদ্যোগ।’

হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যখন থেকে ই–টিআইএন চালু হয়েছে, তখন থেকেই এই দুই হাজার টাকার নিয়ম চালু করা প্রয়োজন ছিল।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সিএ ভবনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আইসিএবি। সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হুমায়ুন কবির এসব কথা বলেন।




শেষ পর্যন্ত ধসেই গেল মার্কিন ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক, কিনছে জে পি মরগ্যান


সংকটে পড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক কিনে নিচ্ছে জে পি মরগ্যান চেজ অ্যান্ড কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ব্যাংকটি জব্দ করা হয়েছে এবং জে পি মরগ্যান ব্যাংকটি কিনে নেবে, সে বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় একটি ব্যাংক ধসে পড়ল।

রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, জে পি মরগ্যান ফার্স্ট রিপাবলিকের সবকিছু নিচ্ছে না। তারা ফার্স্ট রিপাবলিকের ১৭৩ বিলিয়ন ডলার বা ১৭ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ঋণ, ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের সিকিউরিটিজ ও ৯২ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ২০০ কোটি ডলারের আমানত অধিগ্রহণ করছে। তবে ফার্স্ট রিপাবলিকের করপোরেট ঋণ ও কিছু স্টক অধিগ্রহণ করবে না তারা।








বিদেশি ঋণে বাড়ল পাকিস্তানের রিজার্ভ

পাকিস্তান সরকার ৩০০ মিলিয়ন বা ৩০ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্যিক ঋণ পাওয়ার ফলে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত বেড়েছে। ১৪ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে সেই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানে (এসবিপি) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন বা ৪৪৩ কোটি ডলার।

গতকাল বৃহস্পতিবার এসবিপির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মূলত রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ কোটি ডলারের বাণিজ্যিক ঋণের প্রাপ্তির কারণে। এই পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে দেশটির এক মাসেরও আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে না। পাকিস্তানে বেশ কয়েক মাস ধরেই এ রকম অবস্থা বিরাজ করছে। অর্থনীতিবিদেরা সাধারণত কোনো দেশের অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থাকলে সেটাকে মোটামুটি নিরাপদ অবস্থান বলে মনে করেন। সেই হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে পাকিস্তান যে বিপদে, মানে ঝুঁকিতে আছে, তা বোঝা যায়।





উত্তরাঞ্চলে সবুজের সমারোহ

৫ হাজার কোটি টাকার ফসল উৎপাদন মৌসুম শুরুর আগেই সবজি ক্ষেতের মোহনীয় রূপ! দেশের খাদ্যের জোগানদাতা কৃষকের দিকে তাকানোর কেউ নেই বিদেশে আলু রফতানি করে শত কোটি টাকা আয় করা সম্ভব

আবহাওয়া অনুকূলে হলেও উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সব উপকরণের দাম প্রতিকূল অবস্থায়। সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ সঙ্কটসহ কৃষি উপকরণের ক্রমাগত দাম বাড়ছে। সবজি চাষাবাদের মৌসুম শুরু আগেই দেশের উত্তরাঞ্চলের চাষিরা ক্ষেতে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়ার কারণেই শীতকালে সবজির চাষাবাদি বেশি হয়ে থাকে। ঐতিহ্যগতভাবে ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময়ের চাষাবাদকে রবি মৌসুম ধরা হয়। সেই অর্থে এখন ভরা রবি মৌসুম চলছে। দেশের সর্বোত্তরের পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া। নাটোর থেকে কিছুটা পশ্চিমে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, একটু দক্ষিণে পাবনা, ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া এলাকার মাঠে মাঠে এখন হেমন্তের কাঁচাপাকা ধান, শাকসবজির ক্ষেত যেন কবি জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’ কবিতার মতো চিরায়তরূপকে আরো মনোরম করে তুলেছে। অথচ কৃষিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। কৃষকরা শাকসবজি ফলিয়ে দেশের চাহিদা মেটাচ্ছেন কৃষকের দিকে তাকানোর যেন কেউ নেই।

কৃষি বিভাগের প্যাকেজ হিসেবে গত ৩ বছরে উত্তরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে গড়ে দেড় লাখ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ হচ্ছে। উৎপাদন হচ্ছে গড়ে ৩০ লাখ মেট্রিক টন সবজি। যার বাজার মূল্য ৫ হাজার কোটি টাকার কম নয়। কৃষকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর কারণে উৎপাদিক সবজি প্রতিদিন ঢাকায় চলে যাচ্ছে। তবে পথে পথে চাঁদাবাজির কারণে রাজধানী ঢাকায় সবজির দাম অনেক বেশি হলেও কৃষকরা প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না। মধ্যস্বত্বভোগীরাই সবজির দামের বড় অংশ পকেটে ভরছেন।

উত্তরাঞ্চলের মাঠে মাঠে এখন কাঁচাপাকা আমন ধান, ধান ক্ষেতের পাশেই দিগন্ত বিস্তৃত সবজির ক্ষেত। মৌসুমি ফসল ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বরবটি, সিম, বেগুন, লাউ, কুমড়ো, করলা, পটল, কাঁকরোলসহ লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, বিভিন্ন প্রজাতির ডাটা শাকের পাশাপাশি ধনেপাতা, পুদিনা পাতার লাল সবুজ রং বাংলার মোহনীয় রূপকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে।

জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেছেন, গত এক যুগে কৃষি ব্যবস্থাপনায় যে পরিবর্তন হয়েছে তাতে সবজি চাষে উত্তরাঞ্চলের চাষিদের আগ্রহ বেড়েছে। রাজশাহী কৃষি অঞ্চল এক বিভিন্ন রকম ডাল জাতীয় ফসল, পেঁয়াজ, রশুনের পাশাপাশি কাটোয়ার ডাঁটার চাষ হতো ঐতিহ্যগতভাবে। এখন আলু, বেগুনসহ সব রকমের সবজিরই চাষ হচ্ছে। সবজি এখন মৌসুমি ফসল নয় আলু ছাড়া সব ধরনের সবজিই ১২ মাসই চাষ হচ্ছে। রাজশাহী ক্রমশ সবজি নগরী নামেই পরিচিত হয়ে উঠছে। রাজশাহী অঞ্চলের ৭ লক্ষ হেক্টর জমির মধ্যে বর্তমানে ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হচ্ছে। প্রতিবছরই বাড়ছে সবজি চাষের আওতা। এসব জেলা ছাড়াও লালমনির হাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জে হাজার হাজার একর জমিতে সবজির চাষাবাদের প্রক্রিয়া চলছে। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম বিএসসি জানান, আগাম ধান কাটার পর জমিতে কফি, বেগুন ও আলু বপণের প্রক্রিয়া চলছে। তবে কয়েকদিন পর ব্যাপকভাবে সবজি চাষাবাদ শুরু হবে।

রংপুর কৃষিবিভাগের হিসেবে দেখা যায় এখন (বৃহত্তর রংপুর) ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে সবজির চাষাবাদ হয়। এক সময় রংপুরে নাপা শাকপাতা নামের এক প্রকার চাষাবাদ হতো। লালমনিরহাটের কৃষকরা এই শাক ব্যাপকভাবে ফলাচ্ছেন।

কৃষকরা জানান, এক সময় কার্তিক মাসের পুরোটাই মানুষকে বসে থাকতে হতো। কোথাও কোনো কাজ ছিল না। খাদ্যাভাব হতো, যা ‘কার্তি মাসি মঙ্গা’ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সবজি চাষের প্রচলনের পর সেই পরিস্থিতির চিত্র পুরোটাই পাল্টে গেছে। দূর হয়েছে কার্তিক মাসের মঙ্গা। রংপুরের বিখ্যাত তামাক চাষ আর আগের মত নেই। প্রতিবছর একটু একটু করে কমছে তামাকের আবাদ আর বাড়ছে সবজির চাষ। এখন লালমনিরহাট, নিলফামারি ও রংপুরের হারাগাছ এলাকায় কিছু তামাক চাষ দেখা গেলেও অন্যান্য উপজেলায় এ চাষাবাদ নেই বললেই চলে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁওজুড়েই এখন নানান জাতের গোল আলুর পাশাপাশি সব ধরনের সবজিই চাষ হচ্ছে ব্যাপকভাবে। ফলে ঠাকুরগাঁও-এর কৃষি অর্থনীতির ভিত্তি হচ্ছে শক্তিশালী। পরিবেশ ও পানি গবেষক পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়ার সাবেক ডিজি আব্দুল মতিনের মতে, রবি মৌসুমে ধানের আবাদের পরিবর্তে সবজি চাষের আওতা বৃদ্ধিতে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহারের চাপ কমবে অনেক। সার, বীজ, কীটনাশক সহজলভ্য ও সুলভ করার দিকে বিশেষ নজর দেয়ার জন্য তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার মতে, এই সময়ে দেশে সবজির ফলনের প্রাচুর্যের কারণে সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো আছে। চালের উচ্চ মূল্যের কারণে মানুষ ভাত কম পরিমাণে এবং সবজি বেশি পরিমাণে খেতে অভ্যস্ত হচ্ছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন জানান, বগুড়া এক সময় বিখ্যাত, পাকড়ি ও হাগড়াই আলু, ঝাল মরিচ ফসলের জন্য সুপরিচিত ছিল। কিন্তু এক দশকজুড়ে বগুড়ায় সবধরনের সবজির চাষাবাদ বাড়ছে। বগুড়া উত্তরের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, দিনাজপুর, বৃহত্তর রংপুরের কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট, নিলফামারী, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট থেকে বগুড়ায় প্রবেশপথ মোকামতলা ও মহাস্থানহাটে এখন বৃহত্তম সবজির পাইকারিহাট বসে। এখান থেকেই রাজধানী ঢাকায় সবজির সবচেয়ে বড় চালান যায়। এই দুটি হাট থেকে মধ্যপ্রাচ্যসহ ৮টি দেশে নিয়মিত সবজি রফতানি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সবজির পাশাপাশি কলা চাষও হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। উত্তরের জেলাগুলোতে একরের পর একর জমিতে কলা চাষ হচ্ছে। যা উত্তরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

কৃষকরা জানান, কলা, আলু, বেগুন, টমেটো, মরিচ, কফি, মুলাসহ সব ধরনের সবজি এখন কিছু কিছু বিদেশে রফতানি হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের সবজির পাইকারি বাজারের বড় আড়ত মহাস্থানের মুক্তি ফল ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী রহেদুল ইসলাম বলেন, বিদেশে আরও সবজি রফতানি হলে সবজি খাতই হতে পারবে রেমিট্যান্স আর্নিং সোর্স। এছাড়া এখন ১২ মাসই সবধরনের সবজির আবাদ হওয়ায় কৃষি খাতে বহু বেকারের কর্মসংস্থান হচ্ছে। তবে তিনি সবজি পরিবহনে দেশের রেল বিভাগকে বিশেষ তৎপর হতে পরামর্শ দেন। তারমতে রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহী থেকে ট্রেনে করে সবজি পরিবহনের ব্যবস্থা করতে রেল মন্ত্রণালয় কর্তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিশিষ্ট সমাজকর্মী কেজি ফারুক ইনকিলাবকে বলেন, কৃষিনির্ভর উত্তরাঞ্চলে ইদানীং সবজি চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ্যনীয় হয়ে উঠেছে তা’ উৎসাহ ব্যাঞ্জক বৈকি। তবে দেখতে হবে উৎপাদক চাষি ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে কি না? তাদের কাছে কৃষি উপকরণ সহজলভ্যতার সাথে পৌঁছে কি-না? পরিবহন খাতে অর্থাৎ উত্তরাঞ্চলের পাইকারি আড়তের সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট খুলনায় পাঠাতে পথেপথে পরিবহনে চাঁদাবাজি হচ্ছে কি-না? তিনি ব্যাপক সবজি উৎপাদনের কারণে রিজার্ভ এর ডলার শূন্যতা, মুদ্রাস্ফীতির চাপ সরাসরি সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও সেভাবে প্রভাব ফেলেনি।

রংপুরের পীরগাছা মহিলা কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক আমিন উল্লাহ (গ্রামের বড় গেরস্থ) বলেন, এক সময় মুন্সিগঞ্জকে আলুর জন্য বিখ্যাত বলা হত। এখন রংপুরের কৃষকরা যে পরিমাণ আলু উৎপাদন করছেন, তার অর্ধেক আলু মুন্সীগঞ্জে উৎপাদন হয় না। অন্যান্য সবজি ছাড়া শুধু রংপুরে যে পরিমাণ আলু উৎপাদন হয় তা যদি ট্রেনে করে ঢাকায় নেয়া যেত এবং সংরক্ষণ করা হতো তাহলে কৃষকরা উপকৃত হত। এ ছাড়া সরকারি চ্যনেলে বিদেশে আলু বিক্রির ব্যবস্থা করা গেলে রংপুরের আলু রফতানি করে শত কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু উত্তরাঞ্চলকে এখনো বঞ্চিত করা হচ্ছে।

নওগাঁ থেকে এমদাদুল হক সুমন জানান, উত্তর জনপদ শষ্য ভান্ডার খ্যাত রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি মাঠ জুড়ে এখন সবুজের হাতছানি। যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। ক্ষেতগুলোতে এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।

পূবালি বাতাস, শিশির ভেজা কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকেরা জমিতে হাল চাষ, চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি ও ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। শীতের শুরুতে পার্শ্ববর্তী জেলা গুলোতে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠাবে এ এলাকার কৃষকরা।

সবুজে সবুজে ভরে উঠছে ফসলের মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি সীম গাছের ডগা, শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা। তাই মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষকরা। কাক ডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানী, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে এখন কৃষকরা ।

ভবানীপুর গ্রামের কৃষক ওয়াজেদ আলী লিটন ও মাগুড়াপাড়া গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সবজি চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক ভাবে মূলধনও কম লাগে। পরিশ্রমও তুলনামূলক কম। প্রায় প্রতিদিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়। পরিবারের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হয়। ক্ষেতে সবজি থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে কমবেশি টাকা থাকে।

সবজির কদর সারাদেশেই রয়েছে। তবে তা আগাম চাষ করতে পারলে আরও বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করলে কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষ করা সম্ভব।

আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ কে এম কাউছার হোসেন জানান, কৃষকদের সবজি চাষে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। বর্তমানে সীম, বেগুন, লালশাক, মুলা শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো এর আবাদ চলছে বলে তিনি জানান। সবজি চাষে যুক্ত উপজেলার কৃষকরা এবার বেশ উৎফুল্ল। কারণ তারা প্রাকৃতিক অনুকুল পরিবেশের জন্য এবার উৎপাদিত ফসলের ফলন ও দাম বেশ ভালো পাবেন বলে তিনি মনে করছেন। কৃষি বিভাগের লোকজনের নিয়মিত মনিটরিংয়ে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফাও বেড়েছে কয়েকগুণ। চাষিরা এখন বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষাবাদ করে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে বলেও জানান।
গোদাগাড়ী (রাজশাহী থেকে) মো. হায়দার আলী জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে মাঠে এখন পাকা সোনালী আমনের নজরকাড়া দুলনী। সে সাথে দুলছে কৃষকের মন। মাঠের পর মাঠজুড়ে সোনালী শিষে ভরা আমনের ক্ষেত। সোনালী ধানের শীষের সাথে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। করোনা বিপর্যয়, বন্যা, অতিবর্ষণের ধকল কাটিয়ে ঘাম ঝরা ফসল ঘরে তোলার সোনালী স্বপ্ন কৃষকের চোখে মুখে। কোথাও কোথাও দেখা যায় শীতের সোনামাখা রোদ গায়ে মেখে আমন কাটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের ব্যস্ততা।

তরে কৃষকরা বলছেন, এবার আলুর দাম ভালো পাওয়ায় ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে চাষীরা আলু চাষের জন্য আগাম ধান কেটে আলু লাগানো শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফলে দেখা দিয়েছে ধান কাটা শ্রমিকের সঙ্কট। ধান কাটা শেষ হলেই আলুর জন্য জমি প্রস্তুত করা হবে। তাই দ্রুত ধান কাটার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় শ্রমিকদের মজুুরি বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক ধান কাটার পর আলু রোপনের জন্য জমি তৈরি শুরু করতে পারেন নি।


ঐতিহাসিক বিরোধ : চীনের প্রতি কোয়াড দেশগুলোর প্রচ্ছন্ন বার্তা

চীনের সঙ্গে কোয়াড দেশগুলোর নানা বিষয় নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা রয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী এসব সমস্যা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি উদীয়মান কৌশলগত পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ এই গোষ্ঠীকে চীনের কাছে প্রচ্ছন্ন বার্তা পাঠাতে বাধ্য করছে। যেটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করছে। যৌথ বিবৃতির বরাতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কোয়াড্রল্যাটারাল সিকিওরিটি ডায়ালগ বা কোয়াড হলো ভারত, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের একটি জোট। এ সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক অগ্ৰযাত্রা প্রতিহত করা। যদিও প্রশান্ত মহাসাগরে অবাধ নৌ চলাচল নিশ্চিত করার কথা বলে এ সংগঠনটি যাত্রা শুরু করেছিল। বর্তমানে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে রুখে দেওয়া কোয়াডের মূল উদ্দেশ্য।
ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানই কোয়াডের সব সদস্যেরই চীনের সঙ্গে ঐতিহাসিক নানা ইস্যু আছে। যা চীনের সম্প্রসারণবাদী লক্ষ্যগুলোকে তাড়া করার চেষ্টা করছে। তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে ভারত।
দ্য ডিপ্লোম্যাটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২১৬৭ মাইল দীর্ঘ চীন-ভারত সীমান্তে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট আরও জানিয়েছে, কোয়াডের অন্য সদস্যদের সঙ্গেও চীনের সম্পর্ক একটি শক্ত জায়গায় রয়েছে। যখন জাপানের কথা আসে, তখন জাপান-শাসিত সেনকাকু এবং দিয়াওয়ু দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে চলমান বিরোধের বিষয়টিই সামনে আসে। চীন দাবি করে যে এই দ্বীপগুলি তার ভূখণ্ডের অংশ।
জাপানের পরে আছে অস্ট্রেলিয়া। চীনের সঙ্গে সলোমন দ্বীপের নিরাপত্তা চুক্তি অস্ট্রেলিয়াকে বিরক্ত করে তুলেছে। চীনের সঙ্গে সলোমন দ্বীপের কাছাকাছি অবস্থান নিয়ে সতর্ক অস্ট্রেলিয়া। শেষ কোয়াড সদস্য বিশ্বের প্রাচীনতম গণতন্ত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
তাইওয়ান প্রণালীতে স্থিতাবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ঝামেলা লেগে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে যে তাইওয়ানে স্থিতাবস্থার কোনো পরিবর্তন হলে দেশটি তার সামরিক শক্তি ব্যবহার করবে।
অন্যদিকে, চীন দাবি করে যে তাইওয়ান তার অংশ, ছিল এবং থাকবে। কোয়াড সদস্যদের সঙ্গে চীনের এই সমস্ত দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা দৃঢ়ভাবে চীনের দিকে প্রতিটি কোয়াড দেশের সামরিক বাহিনীর ব্যক্তিগত মনোযোগকে নির্দেশ করে।
দ্য ডিপ্লোম্যাট প্রতিবেদন করেছে, এই সমস্ত ঐতিহাসিক বিরোধ এবং উদীয়মান কৌশলগত উদ্বেগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য হুমকি তৈরি করেছে এবং ভবিষ্যতের সংঘাতের জন্য সম্ভাব্য অনুঘটক হিসেবেই তা বিবেচিত হবে। এএনআই।




পাকিস্তানে পেট্রলের দাম কমল সাড়ে ১২ রুপি

পাকিস্তানে পেট্রলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। নতুন অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার গতকাল শুক্রবার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন। মধ্যরাত থেকে জ্বালানি তেলের নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। খবর ডন ও জিও নিউজের। 

 পেট্রলের দাম লিটারে ১২ রুপি ৬৩ পয়সা কমিয়ে ২২৪ রুপি ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৯ টাকা ৮৮ পয়সা। 

লিটারে ডিজেলের দাম কমানো হয়েছে ১২ রুপি ১৩ পয়সা। এখন ডিজেলের দাম দাঁড়িয়েছে ২৩৫ রুপি ৩০ পয়সা যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৪ টাকা ৫৫ পয়সা। 

এ ছাড়া কেরোসিনের দাম লিটারে ১০ রুপি ১৯ পয়সা কমানো হয়েছে। প্রতি লিটার কেরোসিন এখন ১৯১ রুপি ৮৩ পয়সায় বিক্রি হবে যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৫ টাকা ২৩ পয়সা। 

কয়েক দিন আগে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল পদত্যাগ করেছেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর টুইট করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে ফেরা ইসহাক দার দেশটির সংকটে জর্জর অর্থনীতি সামলানোর দায়িত্ব নেন। 

ইসহাক দার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে ‘বিস্তারিত আলোচনার’ পর জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ঘোষণার পরপরই টুইটে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ বলেন, এই পদক্ষেপের ফলে জনগণ শেষ পর্যন্ত কিছুটা স্বস্তি পাবে। মরিয়ম সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতার সমালোচক ছিলেন। 

একইভাবে ক্ষমতাসীন দলের দাপ্তরিক টুইটারে বলা হয়, জনগণকে স্বস্তি দিতে এ ধরনের আরও পদক্ষেপ আসছে, ইনশা আল্লাহ।



রেকর্ড বন্যার পর এবার পাকিস্তানে ডেঙ্গুর প্রকোপ

সাম্প্রতিক বিধ্বংসী বন্যার পর পাকিস্তানে আসন্ন নতুন এক সংকটের বিষয়ে সতর্ক করছেন দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। পাকিস্তানের কিছু অংশে এখনো উদ্ধার অভিযান ও লোকজনকে সরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও মারাত্মক গ্যাস্ট্রিক সংক্রমণের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যায় পাকিস্তানে ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মধ্য জুন থেকে শুরু হওয়া এই বন্যায় প্রায় দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

জমে থাকা পানির পাশে বাস্তুচ্যুত অনেক মানুষকে বসবাস করতে হচ্ছে। ডেঙ্গুতে ইতিমধ্যে কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।



‘বিশ্বের বিপদ’ মোকাবিলায় সহযোগিতার আবেদন জাতিসংঘ মহাসচিবের

`বিশ্বের বিপদ’ মোকাবিলায় সংহতি ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ৭৭তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গুতেরেস এ আহ্বান জানান। -আলজাজিরা।

সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, ‘ভঙ্গুর বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা’, দারিদ্র্য, অসমতা, ক্ষুধা এবং বিভাজনের উল্লেখ করে মঙ্গলবার আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘শান্তি, মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমরা বিপদের মুখোমুখি হয়েছি।’ সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনের আগে জাতিসংঘ প্রধান আরও বলেন, অভিন্ন চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় দরকার অব্যাহত সংহতি যা আমরা এই সংস্থায় বৃহৎ অঙ্গীকার ও সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে প্রদর্শন করি। সবার জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অব্যাহত সংহতির প্রয়োজন হবে বলেও জানান তিনি।

আগামী সপ্তাহে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সরকার ও রাষ্ট্র্রপ্রধান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেবেন। সেখানে তারা পর্যায়ক্রমে বক্তব্যও রাখবেন। এদিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার জন্য রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে মস্কোর অনুরোধে ভিসা দেওয়া হয়েছে বলে রাশিয়ান কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তবে অর্ধেক প্রতিনিধিদলের জন্য ভিসা ইস্যু করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজয়ার গত ২ সেপ্টেম্বর গুতেরেসকে লেখা একটি চিঠির তথ্য অনুসারে, মস্কো ওয়াশিংটনের কাছে ৫৬টি ভিসা চেয়েছিল। তবে রাশিয়ার কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ২৪টি ভিসার অনুমোদন করেছে। ১৯৪৭ সালের জাতিসংঘের ‘হেডকোয়ার্টার চুক্তির’ অধীনে যুক্তরাষ্ট্রকে সাধারণত বিদেশী কূটনীতিকদের জন্য জাতিসংঘে প্রবেশের অনুমতি দিতে হয়। কিন্তু ওয়াশিংটন বলছে, নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ এবং পররাষ্ট্র নীতির কারণে তারা ভিসা প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

জাতিসংঘ এই মাসের শুরুতে বলেছিল, রাশিয়ান প্রতিনিধি দলের ভিসা ইস্যু নিয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছে। মূলত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ইউক্রেনে মস্কো আক্রমণ করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চ-পর্যায়ের অধিবেশন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে।

এদিকে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যানুষ্ঠান আগামী সোমবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে বিশ্বের শতাধিক নেতা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একইদিনে জাতিসংঘে শিক্ষা সংক্রান্ত একটি শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। এতে ৯০ জন নেতা অংশ নেবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, ব্রিটিশ রানির শেষকৃত্যে যোগ দিতে লন্ডন যাবেন না আন্তোনিও গুতেরেস।





ভারতের ৭ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যোগাযোগ ও বাণিজ্য আরও উন্নত করতে এই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে অন্তত তিন দিনের জন্য বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ করেছি। তাদের সঙ্গে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও থাকতে পারেন।
শাহরিয়ার আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় আলোচনার ধারাবাহিকতায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী কিষান রেড্ডি কয়েকটি উদ্যোগের কথা বলেছেন। সেগুলোর ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা





সংকটে পড়বে আবাসন খাত নতুন ড্যাপে ভবনের উচ্চতা নিয়ে বাধ্যবাধকতা দেওয়ায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া কমে যাবে।

নতুন ড্যাপ অনুযায়ী ভবনের উচ্চতা হ্রাস করতে হবে। এতে ফ্ল্যাটের দাম আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। রাজধানীর উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের সাম্প্রতিক 

ঢাকা মহানগরের জন্য নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তাতে গুলশান, বারিধারা, ধানমন্ডিসহ কয়েকটি এলাকা ছাড়া অধিকাংশ এলাকায় বর্তমানের চেয়ে কম উচ্চতার ভবন নির্মাণ করতে হবে। নতুন ড্যাপের কারণে অ্যাপার্টমেন্টের দামও বাড়বে বলে জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, নতুন করে নানামুখী জটিলতায় পড়বে আবাসন খাত।

আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন ড্যাপে ভবনের উচ্চতার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া কমে যাবে। তাই অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাটের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে জমির মালিকের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে কিন্তু ভবনের নকশা অনুমোদন হয়নি, তা নিয়েও জটিলতায় পড়বে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো।

নতুন ড্যাপের কারণে ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় আগের চেয়ে কম উচ্চতার ভবন নির্মাণ করতে হবে। জমির দামও কমছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফ্ল্যাটের দাম আরও বাড়বে।
আলমগীর শামসুল আলামিন, সভাপতি, রিহ্যাব

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গত ২৩ আগস্ট নতুন ড্যাপের প্রজ্ঞাপন জারি করে। নতুন ড্যাপ অনুযায়ী, গুলশান, বারিধারা, শাহবাগ, বাংলামোটর, পরীবাগ ও ধানমন্ডি এলাকায় তুলনামূলক উঁচু ভবন বানানো যাবে। তবে উত্তরা, মিরপুর ১১, বাউনিয়া, পাইকপাড়া, কল্যাণপুর, জোয়ারসাহারা, কুড়িল, খিলক্ষেত, কালাচাঁদপুর, কড়াইল, মেরুল বাড্ডা, রামপুরা, উলন, নিকেতন, নয়াটোলা, মধুবাগ, গোড়ান, সিপাহীবাগ, মধ্য বাসাবো, আনসারাবাদ, সবুজবাগ, কদমতলা, দক্ষিণগাঁও, মালিবাগ, শান্তিবাগ, শুক্রাবাদ, পশ্চিম রাজাবাজার, জিগাতলাসহ কিছু এলাকায় নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে উচ্চতা আগের চেয়ে কমবে। বর্তমানে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, উত্তরায় তিন কাঠার একটি প্লটে সর্বোচ্চ সাততলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যায়। নতুন ড্যাপ অনুযায়ী, সেখানে সর্বোচ্চ ছয়তলার বেশি ভবন নির্মাণ করা যাবে না।





ভারত গণতান্ত্রিক চরিত্র অক্ষুণ্ণ রাখবে বিশ্বাস ফখরুলের

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “ভারত আমাদের বন্ধুত্বের দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা বিশ্বাস করি, ভারত তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র অক্ষুণ্ণ রাখবে। আমরা আগেও বলেছি, সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভারত সরকারকে বলেছি যে, কোনোভাবে আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’ আমরা সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং এটাও বিশ্বাস করি যে গণতন্ত্র দেশগুলো সারা বিশ্বে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারা তাদের ভূমিকা অক্ষুণ্ণ রাখবে।”

শুক্রবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কি অর্জন দেখতে পাচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৫৩ কিউসেক পানি কুশিয়ারা নদীর। এছাড়া এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অর্জন দেখতে পাইনি। যেটা দেখতে পাচ্ছি যানবাহন চলার জন্য ভারতের কাছ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে। বলা হচ্ছে, সীমান্তে হত্যা জিরোতে আনা হবে; যেদিন এ কথা বলা হয়েছে সেদিনই দিনাজপুর সীমান্তে একজনকে হত্যা করা হয়েছে, আর দু’জন নিখোঁজ রয়েছে। এই হচ্ছে দৃশ্যমান প্রাপ্তি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, মহিলা দল প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য তাদের ভূমিকা রেখেছে। এখনো আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতন দমন-পীড়ন সহ্য করে, জেল জুলুম সহ্য করে তারা লড়াই অব্যাহত রেখেছে। যখন ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ব বাদি সরকার বাংলাদেশের মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিচ্ছে। মিথ্যার মধ্য দিয়ে, জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, বিশ্বকে ভুল বুঝিয়ে, বিশ্ব বিবেককে ভুল বুঝিয়ে, বিশ্ব জনমতকে ভুল বুঝিয়ে তারা তাদের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার জন্যই জনগণের উপর স্টিম রোলার চালাচ্ছে।




মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে, দাবি জান্তাপ্রধানের

সেনা অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি হওয়ার পর দেশজুড়ে যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির ‍সৃষ্টি হয়েছিল, বর্তমানে তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন দেশটিতে ক্ষমতাসীন জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। -রিয়া নভোস্তি

তিনি আরও বলেছেন, আগামী বছর আগস্টে মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনকে সফল করতে সেনাবাহনী তার ‘সর্বশক্তি’ দিয়ে চেষ্টা করবে। এক সরকারি সফরে বর্তমানে মস্কো আছেন জান্তাপ্রধান। রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে মস্কোর সঙ্গে বৈঠক করাই চলতি এ সফরের উদ্দেশ্য। মঙ্গলবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্লেইং বলেন, ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে।’

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উচ্ছেদ করে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। অভ্যুত্থানের পরপরই গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় অং সান সুচিকে এবং তার বিরুদ্ধে আনা হয় একরাশ দুর্নীতির অভিযোগ। মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোর বিশেষ আদালতে বর্তমানে বিচার চলছে অং সান সুচির। কয়েকটি মামলায় তার সাজা ঘোষণা করে রায়ও ঘোষণা করেছেন আদালত।

অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী শক্তি ও সাধারণ জনগণ। প্রথম পর্যায়ে বিক্ষোভ দমন করতে লাঠি, জলকামান, রবার বুলেট ব্যবহার করা হলেও একসময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা। দেশটির রাজনৈতিক কয়েদিদের আইনী সহায়তা দানকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, গত দেড় বছরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মিয়ানমার জুড়ে ২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এবং কারাগারে বন্দি করা হয়েছে অন্তত ১০ হাজার বিক্ষোভকারীকে।

এদিকে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার শুরুর পর গণতন্ত্রপন্থী বিভিন্ন শক্তিও নিজেদের মধ্যে সংগঠিত হওয়া শুরু করে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামের একটি ছায়া সরকার গঠিত হয়, যা মূলত দেশটিতে সক্রিয় বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দল ও জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীসমূহের জোট। তবে রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জান্তাপ্রধান দাবি করেন, গত বছর মিয়ানমার জুড়ে ব্যাপকমাত্রায় অনাকাঙ্ক্ষিত নানা ঘটনা ঘটা শুরু হয়েছিল; কিন্তু চলতি বছর এপ্রিল থেকে সেসব কমে আসছে। যদিও এই হ্রাস ধীর গতিতে ঘটছে, তবু ইতোমধ্যে শান্তি ফিরে আসার প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে মিন অং হ্লেইং আরও জানান, আগামী আগস্টে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের যে পরিকল্পনা জান্তার রয়েছে, তা বাতিলের কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই। আমরা জাতিকে নিকট ভবিষ্যতের মধ্যেই সাধারণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তার সর্বশক্তি দিয়ে এই প্রতিশ্রুতি পূরণের চেষ্টা করবে। এবং সেই নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও বিদেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত,’ রিয়া নভোস্তিকে বলেন হ্লেইং।






মিনিকেটের প্রতারণা বন্ধে মোটা চাল খাওয়ার পরামর্শ ভোক্তা অধিদপ্তরের

মানুষকে মোটা চাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকার কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরের কার্যালয়ে সুপারশপ ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও আগোরা, স্বপ্ন, ইউনিমার্ট ইত্যাদি সুপারশপের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। চাল, মসুর ডাল, আটা, ময়দা, সুজি, লবণ—এসব পণ্যের বিক্রয়মূল্যের তথ্য সুপারশপের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থাপন করেন।

‘মিনিকেট’ বলতে বাস্তবে কোনো চাল নেই মন্তব্য করে সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের মোটা চাল খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। মোটা চালের ভাত খেতেও মজা এবং মোটা চালের ভাত খেলে মিনিকেট নামের চাল তৈরির সুযোগ থাকবে না।’

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, মিনিকেট চাল প্রতারণা বন্ধ করতে হবে। মিনিকেট চাল প্রতারণা বন্ধে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযানে নামবে এবং মিনিকেট বলতে কোনো চাল বাজারে থাকবে না। ভোক্তারা মোটা চাল খাওয়ার অভ্যাস করলে মিনিকেট চাল আর উৎপাদিত হবে না।

মত বিনিময় সভার এক ফাঁকে বিভিন্ন সময়ে ভোক্তাদের অভিযোগ জানানোর ফলে যে জরিমানা আদায় করা হয়েছে, তা থেকে ১৬ জন ভোক্তাকে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

সভার পর এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আজ বিকেলে আবার যোগাযোগ করা হয়। এ সময় তিনি বলেন, তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুপারশপগুলো ২৯ শতাংশ মুনাফা করে। এটা অতিরিক্ত। এ ছাড়া সুপারশপগুলো ৫৮ টাকার চাল প্রিমিয়াম, সুপার প্রিমিয়াম নামে প্যাকেটজাত করে ৭৮ টাকায় বিক্রি করে।

সুপারশপগুলোর পক্ষ থেকে দাম বাড়ার জন্য একটি গ্রুপকে দায়ী করা হয় বলে জানান সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য কিছুদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রুপ ও সুপারশপের মালিকদের নিয়ে আবার বৈঠক করবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

এদিকে আগামীকাল বুধবার অধিদপ্তর আরেকটি মতবিনিময় সভা ডেকেছে। এতে সাবান, ডিটারজেন্ট, টুথপেস্ট, লিকুইড ক্লিনার ইত্যাদি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হবে। এসব পণ্যের উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে, তারা যাতে পণ্যগুলোর দুই বছর আগের দাম, ছয় মাস আগের দাম ও বর্তমান দামের চিত্র নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত হয়।


পাথরঘাটায় সাবেক এমপিসহ বিএনপির ৯৯ নেতা কর্মীর নামে মামলা গ্রেফতার ৫

বরগুনার পাথরঘাটায় বিএনপির সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মনি,পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মোঃ ফারুক সাইফুল ইসলাম জামাল,আবুল হোসেন আবু, সেলিম পহলান ও সহ বিএনপি দলীয় ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে একটি মামলা দায়ের করেছেন পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কাকচিড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলা উদ্দিন পল্টু।

মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতার কৃতরা হলেন বরগুনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফাইজুল মালেক ওরফে সজিব (৩৫), পাথরঘাটা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব খাইরুল ইসলাম শরীফ(২৮), রায়হানপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন ওরফে নয়ন (২৫), পাথরঘাটা পৌর ছাত্রদলের সদস্য মো. শাওন (১৭) ও রায়হানপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য মো. হাসিব (২৩)।
এছাড়াও ওই মামলায় আরো ৩ শ জনকে আসামী করা হয়েছে।

পল্টু এজাহারে উল্লেখ করেন ৪ সেপ্টেম্বর রবিবার সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মনি ঢাকা থেকে আসার পথে পাথরঘাটা সিএন্ডবি নামক স্থানেবসে তার লোকজন আওয়ামীল নেতা কর্মীর ওপরে হামলা চালায় এবং অনেক গাড়ি ভাংচুর করে।
এঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর পাথরঘাটা থানায় মামলা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপি'র আহবায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন তেল গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা অনুযায়ী ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি
ওই সমাবেশে যোগদান করার লক্ষ্যে
৪ সেপ্টেম্বর রবিবার সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মনি ঢাকা থেকে বরগুনার পাথরঘটার নাচনাপাড়ায় নিজ বাড়িতে আসার পথে রায়হানপুর ইউনিয়নের সিএন্ডবি নামক স্থানে আসা মাত্রই মনিকে ভাইকেএঁগিয়ে আনতে যাওয়া গাড়ি বহরে ও মনি সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামীলীগ ও অাওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠন।
তিনি বলেন হামলায় আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়াসহ দুই শতাধিক মটর সাইকেল ভাংচুর করা হলেও উল্টা আমাদের নামে মামলা করা হয়েছে।
জামাল বলেন রবিবারের হামলায় এখনো অনেক নেতা কর্মী ভয়ে ঘরে ফিরেতে পারছেনা এবং তিন জনের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা।

জানতে চাইলে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পাথরঘাটায় বেআইনী ভাবে সমাবেশ, হামলা, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কাকচিড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন পল্টু বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


মানিকগঞ্জে সংঘর্ষের মামলায় বিএনপির ১৯ জনের জামিন লাভ


মানিকগঞ্জে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য ১৯ জন নেতাকর্মী জামিন নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা।

আফরোজা খান রিতা জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির মিছিলে পুলিশ হামলা করেন। এর পর ওই রাতে পুলিশ বাদি হয়ে ৩৩ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরো আড়াই হাজার নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের জন্য নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছেন।

আজ সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোট ডিভিশনে বিচারপতি মোঃ রেজাউল হাসান ও মোঃ আতাবুল্লাহ দ্বৈত বেঞ্চে ১৯ জনের জন্য জামিনের আবেদন করেন ব্যারিষ্টার জমির উদ্দিন সরকার। বিচারক জামিনের উপর শুনানি শেষে ১৯জনকে ৬ সপ্তাহের জন্য জামিন মঞ্জুর করেন।
তিনি আরো জানান বাকী নেতাকর্মীদেরও উচ্চ আদালত থেকে জামিনের ব্যবস্থা করা হবে।


চিতলমারীতে হিস্টেরিয়া রোগে শিক্ষিকা-ছাত্রীসহ আক্রান্ত ১০



বাগেরহাটের চিতলমারীতে হিস্টেরিয়া (মাস সাইকোজেনিক ইলনেস) রোগে এক শিক্ষিকা ও ছাত্রীসহ ১০ জন আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চিতলমারী উপজেলার বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনা ঘটে । শিক্ষকরা বেশি অসুস্থদের মধ্যে শিক্ষিকাসহ ৬ জনকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। বাকি ৪ জনকে বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক মৃণাল কান্তি মিস্ত্রি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লক্ষ্মী বিশ্বাস (২৭), ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী আরিশা আক্তার (১২), নওশিন আক্তার (১৩), সুস্মিতা রায় (১২), সুইটি হীরা (১২) ও ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী আশামনি (১১)। বাকি ৪ জনকে বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক মোহাম্মদ আল আমিন জানান, এটা এমন এক ধরনের রোগ, যেটা মানসিক দুশ্চিন্তা ও ভয় থেকে হয়।

ভারত সফরে প্রত্যেকবার প্রধানমন্ত্রী দিয়ে এসেছেন, কিছু নিয়ে আসেননি: মির্জা ফখরুল



প্রত্যেকবার ভারত সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শুধু দিয়ে এসেছেন, কিছু নিয়ে আসননি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা ‘হতাশা’র বলে প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফর নিয়ে ‘এখনই’ কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ আমাদের অভিজ্ঞতা খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা, ফ্রাস্ট্রেশনের অভিজ্ঞতা, হতাশার অভিজ্ঞতা। আমরা প্রত্যেকবার আশা করেছি যে, এবার প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য কিছু আনবেন। প্রত্যেকবার দেখেছি অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে, নিরাশার সঙ্গে- দিয়ে এসেছেন, নিয়ে আসেননি। সুতরাং ওই একটাই কমেন্ট। আগে আসুক উনি (প্রধানমন্ত্রী) ঘুরে। কি নিয়ে আসছেন আমরা দেখি। তারপরে কমেন্ট করব।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাবেক অর্থমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের নিজ বাড়ি বাহারমর্দন থেকে ঢাকা আসার পথে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার খড়িয়াল নামক স্থানে এক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান সাবেক অর্থমন্ত্রী।

সাইফুর রহমানের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, তার মৃত্যুতে বিএনপি না বাংলাদেশ অত্যন্ত যোগ্য সফল অর্থমন্ত্রীকে হারিয়েছে। আমাদের খুব কষ্ট হয়, লজ্জ্বা হয় আমরা যখন বর্তমান অর্থমন্ত্রীর (আহম মুস্তফা কামাল) সঙ্গে তার দিকে তাঁকিয়ে দেখি। খুব কষ্ট হয়, লজ্জ্বা হয়। কারণ আমরা যখন কমপেয়ার করতে যাই, এই কম্পেয়ার করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, আজকে আমরা একটা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। এই সময়ে সাইফুর রহমান সাহেব যদি আমাদের সঙ্গে থাকতেন, আমরা নিসন্দেহে একদিকে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে তিনি আমাদের সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করতেন। অন্যদিকে এই যে ভ্রান্ত উন্নয়ন বিপ্লব সৃষ্টি করেছে এই সরকার। সেটার আসল চেহারা তিনি উদঘাটন করতে সক্ষম হতেন এবং এই সরকারের যে মূল চেহারা সেটাকে উন্মোচন করতেও তিনি সক্ষম হতেন।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সাইফুর রহমান সাহেব বাংলাদেশের উন্নয়নে, টেকসই উন্নয়নের জন্য যেটা দরকার সেটা করার জন্য কোনো রকমের উনি ভ্রুক্ষেপ করতেন না। অনেকে বলেন যে, অর্থমন্ত্রী হিসেবে উনি একটু কঠিন ছিলেন। কঠিন সেখানেই ছিলেন যেখানে তিনি দেখেছেন এখানে অপব্যয় করবে সেখানে কিন্তু তিনি কোনো রকমের ছাড় দেননি। যেখানেই দেখেছেন এই কাজটা করলে দেশের জন্য, এদেশের মানুষের জন্য এবং এই দেশের অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় হবে সেটার জন্য অর্থ খরচ করতে তিনি কখনো পিছপা হননি।

তিনি বলেন, এম সাইফুর রহমান দেশের স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ার জন্য ভ্যাট থেকে শুরু করে যে পদক্ষেপগুলো গ্রহন করেছিলেন আজকে সেগুলোকে ব্যবহার না করে যেভাবে লুটপাট করা হয়েছে তিনি যদি বেঁচে থাকতে এর বিরুদ্ধে মাঠে নামতেন। আমাদের দেশকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে এই লুটের সরকার, ভোট ডাকাতির সরকারের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। সেজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর পরিচালানায় আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবেদ রাজা বক্তব্য রাখেন








Post a Comment

Previous Post Next Post